নবরত্নে অন্যতম, বরাহ মিহির,
বিক্রমাদিত্যের সভা,করে অলঙ্কৃত।
খনা নামে পত্নী তার, ছিল জ্যোতির্বিদ,
ইহাতেই তিনি হন , ইতিহাসে খ্যাত।
জ্যোতির্বিদ্যার ক্ষেত্রে ,বরাহ স্বয়ং,
পণ্ডিত হিসাবে তিনি , ছিলেন বিদিত।
মিহিরের জন্মক্ষণে ,গণিয়া দেখেন,
স্বল্পায়ু পুত্র ভবে , হইবে না স্থিত।
তাই তারে পাত্রে রাখি , ভাসালেন নীরে,
ভাসিতে ভাসিতে পাত্র, লঙ্কাদ্বীপে আসি।
উপনীত হলো সেথা, রাক্ষসীর ভিড়ে ,
তুলি নিলো কোলে তারা, বড়ো ভালোবাসি।
অতঃপর তারে করে ,লালন পালন,
জ্যোতির্বিদ্যায় তারে ,করেন শিক্ষিত।
যথাকালে খনাসাথে ,বিবাহ বন্ধন,
উভয়েই সমবিদ্যায়,হলেন দীক্ষিত।
বিক্রমাদিত্যের রাজধানী, উজ্জয়িনী নামে,
স্বামীসাথে খনা সেথা,হন উপনীত।
আলাপচারিতা তার ,হলো রাজা সনে,
পরন্তু বরাহ সনে ,হন পরিচিত।
পুত্রবধূ সনে পুত্র ,লয়ে নিজঘরে,
বরাহ এলেন ফিরে, পরম সুখেতে
কালক্রমে খনা তাঁরে, বোঝালেন ধীরে,
গণনায় ভুল তুমি,কহে আচম্বিতে।
জ্যোতির্বিদ রূপে খনা, বিখ্যাত হইলো,
খ্যাতি রটে গেলো তার,এবে চারিদিকে।
বরাহের যশখ্যাতি , ক্ষুণ্ণ হয়ে গেলো,
মাথায় পড়িল বাজ ,যেন কোথা হতে।
একদিন মহারাজা , বরাহে ডাকিয়া,
বলিলেন করো এবে ,নক্ষত্র গণনা।
হেনকার্যে বরাহের , ছিল না দক্ষতা,
যাহা অনায়াসে খনা, করে সম্পাদনা।
রাজসভা প্রশংসায় , হলো মুখরিত,
খনারে আনিতে রাজা, দিলেন আদেশ।
মনস্থির করিলেন, করে পুরস্কৃত,
দেখাবেন তিনি তাঁর,শ্রদ্ধা সবিশেষ।
বধূমাতার সম্মানে ,তার অপমান,
এ হেন বোধেতে তিনি, নিতে প্রতিশোধ।
করিতে কর্তন জিহ্বা, পুত্রে দেন ডাক,
হেনকার্যে পুত্র তাঁরে,করে প্রতিরোধ।
গণনায় বুঝিল খনা ,মরণ আসন্ন,
পতিরে কহিল জিহ্বা, করহ কর্তন।
অতঃপর অনুরোধ , করিতে সম্পন্ন,
কাটিলেন জিহ্বা,না করি বিলম্বন।
তৎক্ষণাৎ মরিল খনা,দৃষ্টান্ত স্থাপিয়া,
স্বামীসহ শ্বশুরের , রাখিতে সম্মান।
এভাবে খনার নাম,রহিল বাঁচিয়া,
তাঁর আত্মত্যাগে ধন্য, এই ধরাধাম।