কষ্ট পেলে আজকাল আর কষ্ট পাই না; মনে করি
এটাই প্রাপ্য ছিলো- পেয়েছিও; তুমি আসবে বলেছিলে, তাই ঘড়ি
দেখি দু-একবার, তারপর দেখি না। পুরো একা ব’সে থাকি,
কিছু ভাবি ও ভাবি না; নিজেকেই সঙ্গী ক’রে রাখি।
যখন চুম্বন করো, দাও মধু, মুহূর্তের জন্যে অমরতা,
তখনও বিষের কথা ভাবি, হয়তো কালকেই বিষের মত্ততা
বইবে শরীরে; তুমি একা নও, আরো কতো জন
এনেছিলো বকুলের গন্ধ, বিকেলের রোদ; তারা কোথায় এখন
তাও জানি না, যদিও মনে পড়ে মাঝেমাঝে। হয়তোবা তারা
এখন সুগন্ধ, স্বপ্নহীন, রক্তশূন্য; শুকিয়েছে কবিতার ধারা
তাদের নদীতে; হয়তো কেউ সিডনিতে, অসলোতে, বার্লিনে,
মাইন নদীর তীরে, পঞ্চগড়, রংপুর, ধানমণ্ডি, সিঙ্গাপুর, জাপানে ও চীনে।
শুধু পাবো, এটা রীতি নয়; হারানোও প্রকৃতির রীতি,
হারানোর পরও পাওয়া যায়, কোকিলের পর শালিখ ও দোয়েলের গীতি
শোনা যায়, ঘুম ভেঙে হঠাৎ স্বপ্নে কাঁপাকাঁপা বুকে সুখ লাগে,
শূন্যতাও শূন্য নয়, অঘ্রাণে ঘাসের মতো দল মেলে জাগে
নতুন সবুজ। তুমি সরিয়ে নিয়েছো দেহ, ব্যাকুল হৃদয়,
সোনালি চিবুক, গ্রীবা, মধুময় ধ্বনির কম্পন, অনেকটা ক্ষয়
হচ্ছি অত্যন্ত ভেতরে, কষ্ট পাচ্ছি, হয়তোবা অন্য কোনো সুখকর বুকে
তুমি আজ পুলকিত; তোমার অভাবে কোনো প্রচণ্ড অসুখে
ভুগছি না; কিন্তু কি ভুগছি না? ভুলিনি তোমাকে, ভুলবো না; সুলতানা
তোমার শরীর, মুঘল কুমারী, অনেকের স্বপ্ন, দুষ্প্রাপ্য, জানা
আছে বহু দিন, তুমিই বলেছো; তবু একটু সন্দেহ
জাগে, তুমি কোথায় এখন? কোথায় তোমার হৃৎপিণ্ড, আঙুরের দেহ?