Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » কলেজ যাওয়া || Maya Chowdhury

কলেজ যাওয়া || Maya Chowdhury

কলেজ যাওয়া

উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট বের হওয়ার আগে থেকেই মনের মধ্যে উন্মাদনা কলেজ যাব। এতদিনে হয়ত স্বাধীনতা পাওয়া যাবে। বন্ধুরা অনেক কিছু প্ল্যান করলাম, বেশ কয়েকজন একসঙ্গে একই কলেজে ভর্তি হব। ক্রমে রেজাল্ট আউট হলো। একই কলেজে ভর্তি হলাম তবে অনার্স সাবজেক্ট সব আলাদা। ক্লাস চলতে আরম্ভ করলো। নতুন অনেক বন্ধু এলো। ধীরে ধীরে পুরনো বন্ধুদের সঙ্গ কমে নতুনদের সাথে সম্পর্কটা বেশি হল। আজকাল আমরা পড়াশোনা ছাড়াও বিভিন্ন বিষয় নিজের ভালোলাগা গুলো প্রাধান্য দিতে থাকলাম। আমি লিখতে ভালোবাসি। কৌশানি গান ভালোবাসে, অমৃতা নাচ। তাই লেখার জগতের বন্ধুরা অনায়াসে বেশি প্রাধান্য পেয়েছিল। বইমেলা, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যুক্ত হওয়া, বই প্রকাশ, কলেজস্ট্রিট, কফি হাউস আমাকে ঘিরে ধরল। পড়াশোনার ফাঁকে লেখালেখি করা, বই পড়া, লাইব্রেরী থেকে বই ইস্যু করা এক অনন্য অনুভূতি। অনেকগুলো বছর হল প্রিয় বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ কমে গেছে, অনেক কেউ আমার জীবন থেকে পুরোপুরি সরে গেছে। কখন যে নতুন এক আবর্তে ব্ নিজেকে বেঁধে ফেলেছি ফিরে দেখা হয়নি। সময় চলমান, এগিয়ে চলেছি নিজেদের স্রোতে। যদিও অনার্স পড়া, এম.এ করাসবই গতানুগতিক ধারায় চলছে। মাঝে শ্রুতি নাটকের জন্য কিছুদিন প্র্যাকটিস করা। অনেক কিছুই করতে ইচ্ছে করে। তবে সব বিষয়ে আমরা তো পারদর্শী হতে পারি না। এইভাবে সুমধুর সময়গুলো পার হচ্ছিল। আজ একটি বয়সের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। প্রত্যেক বাবা-মা চান উপযুক্ত পাত্রের হাতে কন্যাকে সমর্পণ করতে। ভাববার বিষয়, উপযুক্ত পাত্রী ও তো আমি। তাই পাত্রের হাতে সমর্পণ কথাটা মেনে নিতে পারিনা। দুজনের মধ্যে এক চিন্তা ধারা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, এটা কেই বেশি প্রাধান্য দিই। কিন্তু আমরা যখন আবার বাবা-মা হয়ে যাই তখন অর্থের বিচারে ছেলেটিকে বিচার করি। রোজগার বেশি হলে দারুণ ছেলে। আমরা মেয়েরা ছেলেদের থেকে কম তো নয়, আরো বেশি। ওদের মতই আমরা লেখাপড়া করে চাকরির ব্যবস্থা করি। অথচ সংসারে মানিয়ে নেওয়া কর্তব্য আমাদের ওপর বেশি বর্তায়। সারাদিন নিজের কাজটা সম্পূর্ণ করে সন্তানের পুরো দায়িত্ব মায়ের উপর থাকে। তারপর তো অন্যান্যরা আছেন। তাই বৈবাহিক সম্পর্ক টা ছেলে এবং মেয়েটির উপর থাকলেই ভাল হয়। বিয়ের পর ভালো লাগা গুলোকে বিসর্জন দিতে হয়। অথচ ছেলেটি তার ভালোলাগা গুলোকে আরো সুন্দর করে পরিচালনা করে। আমরা মেয়েরা খুব সহজে হার মেনে নিই। হাসিমুখে নিজের ভালোলাগা গুলোকে বিসর্জন দিয়ে অপরের ভালোলাগা মানিয়ে নিতে শিখি। হয়তো তাই বাবা-মায়েরা উপযুক্ত পাত্রের হাতে আমাদের সমর্পণ করেন। আজ আমিও নতুন এক পরিবারে এসেছি। কবিতা লেখা গুলো বন্ধ হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে অন্যের লেখা সামান্য পড়ি। স্বামীর চাকরির সুবাদে কলকাতা ছাড়তে হয়েছে। এই নতুন বন্ধুদেরকে হারিয়ে ফেললাম। এখন একেবারে আমরা দুজন। খুব ভালো লাগছে, ঘুরছি, বেড়াতে যাচ্ছিবেশ আনন্দে দিনগুলো কাটছে। তবে এ সম্পর্ক একসময় পুরনো হবে, অনেক দায়িত্ব এসে পড়বে। আবার আনন্দগুলো ফিকে হয়ে সেই ছেলেবেলার বন্ধুদের খুঁজে ফিরব। যাদের নিজের অজান্তে কখন বাদ দিয়ে ফেলেছি। সেই হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি রোমন্থন করতে খুব ভালো লাগবে। আমরা যেমন গতিশীল, আবার পিছন ফিরে তাকাতে বেশি ভালোবাসি। এইভাবে নতুন-পুরনোর এক মজার খেলায় জীবন এগিয়ে চলেছে। আগামী দিন আবারও কোন নতুন জীবন, সংসারের ফাঁকে ছেলেবেলায় শিখে রাখা গান নাটক নাচ লেখাকে আবার কাছে পাওয়ার চেষ্টা করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *