পর্ব – ৩
পরদিন সূর্যোদয়ের অনেক আগে দুজন অশ্বারোহী হস্তিনাপুরের প্রাসাদ প্রাকার পার হয়ে দূরে জনগনের ভিড়ে দ্রুতগতিতে মিশে গেল।
এসময়টা অর্জুন ও দ্রৌপদী একসাথে ছিলেন, সকাল বেলা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসে দুজনেই বিস্মিত, কক্ষে ব্যবহৃত সকল বস্তুই বতর্মান কিন্তু স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ কোথাও নেই। এসময়ে তিনি কোথায় যেতে পারেন? অর্জুন ক্রমশ উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলেন। কক্ষের বাইরে প্রহরারত রক্ষীকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলেন শ্রীকৃষ্ণকে সম্পূর্ণ একা কক্ষের বাইরে বেরিয়ে যেতে দেখেছেন। তারও আগে গভীর রাতে একবার মহারাজ যুধিষ্ঠিরকে এই কক্ষে প্রবেশ করতে দেখেছেন।
ঠিক তখনই রক্ষীপ্রধান দ্রুত গতিতে অর্জুনের নিকটে এসে আভূমি নত হয়ে নিবেদন করলো, মহারাজ যুধিষ্ঠিরকে তাঁর কক্ষে দেখা যাচ্ছে না। অর্জুনের মনে নানান প্রশ্ন তখন গভীর রাতে সকলের অজ্ঞাতসারে মহারাজ যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণের সাক্ষাৎকার তারপর একই সময়ে দুজনেই প্রাসাদ থেকে অন্তর্হিত, কি সেই রহস্য?
নগর প্রান্তে এসে থামলেন অশ্বারোহী দুজন, মৃদু হেসে শ্রীকৃষ্ণ বললেন আসুন মহারাজ নিজের কর্ণেই শ্রবণ করুন আপনার প্রশস্তি, একটি ক্রয় বিক্রয় কেন্দ্রে প্রবেশ করলেন দুজন। ক্রেতা বিক্রেতার হাস্যালাপে কেন্দ্রের কার্যক্রম তখন তুঙ্গে, এক বিক্রেতা বললেন, যাই বলুন মহাশয় আমাদের মহারাজ যুধিষ্ঠির অত্যন্ত প্রজা বৎসল, দূর্যোধনের সময় করের বোঝায় আমাদের নাভিশ্বাস উঠে গেছিলো, বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আমদানির উপর আন্তঃশুল্ক হ্রাস করে আমাদের বাণিজ্য করার অবাধ সুযোগ করে দিয়েছেন।
অপর জন বললেন আমরাও যথেষ্ট কম মূল্যে সবরকম ব্যবহৃত সামগ্রী পাচ্ছি!
তৃতীয় একজন বললেন, শুনেছি এই প্রক্রিয়াটির উদ্ভাবক কুমার সহদেব। তাঁর জন্যই বাজারে এমন স্থিতিশীলতা, কুমার সহদেব যথেষ্ট প্রাজ্ঞ।
প্রথম জন বললেন রাজা কি আর সহস্তে সবকিছু করেন, তিনি চক্ষু কর্ণের সমন্বয় ঘটান মাত্র!
তৃতীয় জন বললেন তবুও রাজার একটা সম্যক জ্ঞান থাকা উচিৎ, সবাই বলে তিনি নাকি ধর্মপূত্র শুধু বিচার ব্যবস্থাটাই নিজের হাতে রেখেছেন, সত্য ধর্ম নিয়ে তিনি এতটাই অন্ধ যে ক্ষত্রিয় ধর্মের কথাই ভুলে গেছেন।
প্রথম জন বললেন, এভাবে বলতে নেই, জেনে রেখো এসব কথা সব জায়গায় বলতে নেই বাতাসেরও কান আছে।
যুধিষ্ঠির শ্রীকৃষ্ণের দিকে জিজ্ঞাসু চোখে তাকাতেই শ্রীকৃষ্ণ বললেন চলুন মহারাজ আমরা এবার ইন্দ্রপ্রস্থের দিকে যাই ••••