চারিদিকে আজ সাজো সাজো রব।
উমা এলেন ঘরে।।
ঠিক একটি বছর পরে।
গায়ে যে তার জরির শাড়ি, গয়নাগাটি পড়ে।।
আমার উমা আজও কাঁদে, মাটির ভাঙা ঘরে ।।
লক্ষ টাকার প্যান্ডেলেতে কি অপরূপ সাজ।
রাতের বেলায় আলোর মেলায় সবাই হতবাক।।
ঘোরা হবে, খাওয়া হবে, হবে জামা শাড়ি।
চারটে তো দিন, কেটেই যাবে ভীষণ তাড়াতাড়ি ।।
অষ্টমীতে ভোগের থালায় পদের রকমারি।
আমার উমা অভুক্ত আজ ও,
ঘরে নেই তো কানাকড়ি।।
কতো উমার ঘর ভেসেছে বৃষ্টিতে আর ঝড়ে।
তোমরা বলো তাদের কথা কেউ কি মনে করে?
অনাহরে কাটছে যে দিন ছেঁড়া কাপড় পোড়ে।।
মন্ত্র পড়ে, যজ্ঞ করে মাটিকে দাও প্রাণ।
অন্যদিকে, সত্যিকারের প্রাণ ভেসে যায়।।
আমরা তো সব রেগেই আগুন চায় যদি কেউ ত্রান।
ভীষণ রাগে গজগজিয়ে বলছি হেঁকে খুব।
রাখো দেখি এসব কথা।
জানতে কি আর নেই কো বাকি?
যত্তসব বুজরুক।।
মাটির পুতুল যত্নে সাজাও গয়না শাড়ি দিয়ে।
জ্যান্ত উমা? নগ্ন সে প্রায়,
একটাই তো শাড়ি ছিলো, তাও গিয়েছে ছিঁড়ে।।
একলা ঘরে অন্ধকারে আমার উমা কাঁদে।
ক্ষুধার জ্বালায় বাক্য হারায়, কেবল বসে ভাবে।।
তুই নাকি মা জগৎ জোড়া, সবাই তোর সন্তান?
তবে কেনো যায় মা মরে অভুক্ত সব প্রাণ?
কি দোষে আজ ঘর ভেসেছে? সত্যি করে বল?
স্বামী, ছেলের নেই কোনো খোঁজ ।
ভিটে মাটি সব হারিয়ে আজ হলাম নিঃসম্বল।।
এদের কথা একটু যদি আমরা সবাই ভাবি।
দু মুঠো ভাত একটা পোশাক এইটুকু দাবি।।
বলছি যে তাই একটু ভাবো যায়নি চলে দিন।
ধরিত্রীকে মেটাও তোমার মানুষ হওয়ার ঋণ।।