Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » রামায়ণ : উত্তরাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা » Page 39

রামায়ণ : উত্তরাকাণ্ড || কৃত্তিবাস ওঝা

মনেতে ভাবিয়া তবে বলে লঙ্কেশ্বর।
আগে মধুদৈত্য জিনি পিছে ‍পুরন্দর।।
সাগর হইয়া পার সৈন্যে দিল ত্বরা।
চক্ষুর নিমেষে গেল নগর মথুরা।।
ঘেরিল মধুরাপুরী রাক্ষস সকল।
সুখে নিদ্রা যায় মধুদৈত্য মহাবল।।
নিদ্রায় কাতর দৈত্য খাটের উপরি।
কুম্ভনশী বাহির হইল একেশ্বরী।।
রাবণ বলে কহ ভগ্নী দৈত্য গেল কোথা।
আজি দেখা পাইলে কাটিব তার মাথা।।
আমি যদি থাকিতাম লঙ্কার ভিতর।
সেই দিন পাঠাতাম তারে যমঘর।।
রাবণের কথা শুনি কুম্ভনশী ভাষে।
পলাইয়া গেল দৈত্য তোমার তরাসে।।
তোমার বাণেতে ভাই কারো নাই রক্ষা।
সহোদরা ভগ্নী রাঁড়ী কৈলে সূর্পণখা।।
তার স্বামী মারিলে হইয়া মহারাজ।
মোরে রাঁড়ী করি ভাই সাধিবে কি কাজ।।
ধর্ম্মপথে হইয়াছে পতি সে আমার।
সম্মুখে দাণ্ডায়ে এই ভাগিনা তোমার।।
আপনার কথা ভাই আপনি বাখানি।
চৌদ্দ হাজার জায়া তব বিভা কায় রাণী।।
তুমি বলে ধরে আন পরের সুন্দরী।
সবে মাত্র বিভা তব রাণী মন্দোদরী।।
হইলে তোমার কোপ কম্পে দেবগণ।
অনন্ত বাসুকি পলায় দৈত্য কোন্ জন।।
কোপ ছাড় মোর তরে স্বামী দেহ দান।
লবণ নামেতে পুত্র দেখ বিদ্যমান।।
কুড়ি পাটি দন্ত মেলি দশানন হাসে।
কেতকী কুসুম যেন ফুটে ভাদ্রমাসে।।
দশানন বলে আমি না মারিব প্রাণে।
ইন্দ্রে জিনিবারে যাব আসুক মোর সনে।।
কুম্ভনশী চলিল রাবণ আজ্ঞা পেয়ে।
শুয়েছিল মধুদৈত্য তথা গেল ধেয়ে।।
কুম্ভনশী ধেয়ে যায় আলুয়িত চুল।
নিদ্রাভাঙ্গি উঠে মধুদৈত্য মহাবল।।
ঘূর্ণিত লোচনে দৈত্য শয্যাপরি বৈসে।
কুম্ভনশী-ত্রাস দেখি তাহারে জিজ্ঞাসে।।
আচম্বিতে মথুরায় কেন গণ্ডগোল।
গড়ের বাহিরে কেন কটকের রোল।।
কুম্ভনশী বলে তুমি না জান কারণ।
তোমারে বধিতে আইল লঙ্কার রাবণ।।
লঙ্কা হৈতে তুমি বলে আনিলে আমারে।
সেই কোপে আইল তোমারে কাটিবারে।।
দৈত্য বলে শীঘ্র আন শঙ্করের শূল।
সবংশে রাবণে আজি করিব নির্ম্মূল।।
শুনিয়া দৈত্যের কথা কুম্ভনশী কয়।
রাবণের সনে বাদ মরণ নিশ্চয়।।
থাকুক তোমার কার্য্য না পারে বিধাতা।
রাবণের সঙ্গে বাদ অন্যের কি কথা।।
রাবনের দোষ নাই তুমি সর্ব্ব দোষী।
আমারে আনিলে হরে তিন প্রহর নিশি।।
অবিচার কর্ম্ম কেন করিলে আপনে।
আপনি করহ কোপ কিসের কারণে।।
রাবণের কাছে আমি গিয়াছিনু আগে।
তুষ্ট করি আসিয়াছি মিষ্ট অনুযোগে।।
তুষ্ট হয়ে কহিল আমার বিদ্যমানে।
দৈত্য এসে সম্ভাষ করুক মোর সনে।।
প্রধান কুটুম্ব তব হয় মম ভ্রাতা।
আদরে বাটীতে আন কয়ে মিষ্ট-কথা।।
পূর্ব্ব কোপে যদি কিছু কহে মোর ভাই।
সহ্য সমাবেশ কর তাহে ক্ষতি নাই।।
কুম্ভনশী-কথা শুনি মধুদৈত্য হাসে।
যোড় হাত করি গেল রাবণের পাশে।।
রাবণ বলে করেছিলে বড়ই প্রমাদ।
আমার ভগিনী আন এত বড় সাধ।।
স্বর্গ মর্ত্ত্য পাতালে আমারে করে ডর।
যম নাহি যায় ভয়ে লঙ্কার ভিতর।।
কত বল ধর তুমি কত আছে সেনা।
কোন্ সাহসেতে দেহ লঙ্কাপুরে হানা।।
তোরে বান্ধি লইতাম সাগরের পার।
ভস্মরাশি করিতাম মথুরা নগর।।
অগ্নী আসি বিস্তর কান্দিল পায়ে ধরে।
ভগ্নীরে কাতর দেখি ক্ষমিলাম তোরে।।
মধুদৈত্য রাবণের বন্দিল চরণ।
যোড়হাত করি বলে শুনহ রাজন।।
তোমার সংগ্রামে হরি হরে করে ভয়।
আমারে করহ কোপ উপযুক্ত নয়।।
হীনবীর্য্য দৈত্য আমি তুমি মহাবল।
অপরাধ ক্ষমা কর আমার সকল।।
পরম পণ্ডিত তুমি লঙ্কার ঈশ্বর।
আমার মথুরা তব ভোগের ভিতর।।
অবোধ জনার দোষ মার্জ্জনা করহ।
আমার আলয়ে আসি পদধূলি দেহ।।
হাসি হাসি রথ হৈতে নামিয়া রাবণ।
মধুদৈত্য-আলয়েতে করিল গমন।।
আগে আগে মধুদৈত্য পশ্চাতে রাবণ।
অন্তঃপুরে প্রবেশ করিল দুই জন।।
সিংহাসনে বসাইল রাজা দশাননে।
যথাযোগ্য স্থানে বসায় অন্য যত জনে।।
দৈত্যের আদরে তুষ্ট লঙ্কার ঈশ্বর।
দশানন বলে তব চরিত্র সুন্দর।।
মধুদৈত্য বলে আজি থাক এইখানে।
কালি গিয়া যুদ্ধ কর পুরন্দর সনে।।
রাবণ বলে কালি কুম্ভকর্ণের শয়ন।
কুম্ভকর্ণ নিদ্রা গেলে যুঝে কোন্ জন।।
নানা ভোগে রাবণের ভুঞ্জায় দানব।
তথা হৈতে চলে রাবণ পাইয়া গৌরব।।
রাবণ বলিছে দৈত্য শুন মোর বাণী।
আরম্ভ করিব যুদ্ধ থাকিতে রজনী।।
কত অস্ত্র আছে তব জাঠি আর ঝকড়া।
কত সেনা আছে তব হাতী আর ঘোড়া।।
আপন কটক লয়ে চলহ সত্বর।
লুটিব অমরাবতী রাত্রির ভিতর।।
রাত্রির ভিতর স্বর্গে করিব সংগ্রাম।
আসিবার কালে হেথা করিব বিশ্রাম।।
মধুদৈত্যের হাতী ঘোড়া কটক বিস্তর।
সাজিয়া রাবণ সঙ্গে চলিল সত্বর।।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress