তোমরা আমাকে একগুচ্ছ প্রেমের কবিতা লিখতে বলেছো
বলেছো আমি এত প্রাণহীন কেনো ?
কিন্তু কংক্রিটে মোরা মানবতাহীন প্রাচীন কারাগারের মত পরে থাকা এই উপমহাদেশে যখন কেবল হায়নাদের বাস , যখন প্রতিবাদী মুখ গুলো উপোসী–
তখন প্রীতি– ভালোবাসা কেবল প্রগলভতা ময় শব্দ
তখন আর প্রেম পূর্ণ ভালোবাসার কবিতা আসে না ।
যখন রক্তচোষা- মিথ্যাবাদী- স্বৈরাচারী গিরগিটির দল রাজার মুকুট পরে —
তখন প্রেমের কবিতা আসে না।
যখন নগ্ন পায়ে যুবশ্রেণী পথে প্রান্তরে ছুটে বেড়াচ্ছে
যখন বেকারত্বের জ্বালা নিয়েছে দেহ-মনে আশ্রয়
তখন প্রেমের কবিতা আসে না।
কবিতার মত জীবন কে না চায় বলো !
ছন্দ থাকুক , কাব্য থাকুক একটা ঝর্ণার চঞ্চলতা ময় জীবন– এ তো সকলেরই চাওয়ার।
কিন্তু বর্তমান রাষ্ট্রনীতি ওদের চোখ থেকে স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে।
ওদের রক্তক্ষরিত হৃদয় খুঁজে চলে একখণ্ড ছায়ানট ।
“বনলতা সেন ” অথবা “পৃথ্বীরাজ ” ওরাও তো হতে চেয়েছিল!
ওদের স্বপ্নগুলো আজ ভিক্টোরিয়ার মাঠে ফেলে দেওয়া বাদামের ঠোঙার মত হাওয়ায় উড়ে যায় এক প্রান্ত হতে দূরে কোথাও ।
পারো যদি ওদের ভাঙা বুক আর ভুখা পেটের সাথে প্রেম করে দেখো
প্রেম করে দেখাও- যারা প্রতিদিন ফাইলের বোঝা কাঁধে নিয়ে ঘুরে চলে অফিসের দোরে দোরে।
একদিনকার গোপাল অথবা লক্ষ্মী দেখো আজ মা-বাপের চোখের বালি
প্রেসক্রিপশান হাতে গোলির মোড়ে চেয়ে থাকা বাপ বোঝে জীবন কতটা কবিতাময় ।
মা– নিজের পাত থেকে দু-মুঠো ভাত তুলে রাখে খালি পকেটে ঘোরা ছেলেটার জন্য
ওদের প্রশ্ন করো — কবিতা কোথায়? ছন্দ কোথায়!
ওরা প্রেম ভুলেছে ভুলেছে রাষ্ট্র অথবা রাজ্যের কথা
ওরা প্রতিদিন ছুটে চলে নগরের প্রান্তর থেকে প্রান্তরে
ওদের বুক থেকে উঠে আসা চিৎকার আমাকে প্রেমের কবিতা লিখতে দেয় না।
তাই আমাকে প্রেমের কবিতা লিখতে বলো না