অমৃতা (Amtrita) – ৬
আসলে তার মনের মধ্যে একটা কঠিন সংকল্প জন্ম নিচ্ছে। সেই সঙ্গে আত্মধিক্কার। কেন সে বুঝতে পারেনি। কেন? কেন? কেন? শাশুড়ি যখন সেই গোড়ার দিনেই বলে দিলেন, আমাদের নিয়ম—শোবার ঘর বউ ঝাঁট দেবে, রান্না আমরা লোকের হাতের খাই না। এত দিন আমি একা করতাম, এখন তুমি আমি করব।
ওর ভাল না লাগলেও খুব খারাপ লাগেনি। ঠিক আছে, বাড়িতেও তো ছোট্ট থেকে রান্না করছে, ইদানীং একটি লোক রাখা হয়েছে। তাই সে পার্ট ওয়ান-এ ভাল অনার্সটা পেল। গীতবীথি থেকে থার্ড ইয়ারের গানের পরীক্ষাটাও ভালভাবে পাশ করে গেল। ওর খাওয়া-দাওয়ার ওপর যখন খারাপ নজর দিতে লাগলেন শ্বশুর ও শাশুড়ি উভয়েই, সবচেয়ে ছোট্ট মাছটা তার পাতে, সবাইকার ডিম রয়েছে, তারটা কুলোল না, তখন সে বুঝতে পেরেছিল, ইনি শিক্ষিত স্কুল-টিচার হতে পারেন, কিন্তু ইনি সেই সাবেক অন্ধ শাশুড়ি-যুগে পড়ে আছেন। জোর করে চেয়ে নিতে বা এদিকে স্বামীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তার রুচিতে বাধত। এই রকমই দিনের পর দিন কাটে। স্বামী তাকে যা সামান্য হাতখরচ দেয়, তাই দিয়ে বাইরে সে ক্ষুন্নিবৃত্তি করে, শাশুড়ি তার ঘরে পর্দা দিতে দিলেন না। ছেলে বাড়ি আসবার সঙ্গে সঙ্গে তাকে তিনি অধিকার করে নিতেন। দুজনের কথাবার্তা বেড়ানো এসব এই তিন বছরে এমন পর্যায়ে এখনও যায়নি যে সে বলতে পারবে তার স্বামী অরিসূদন লোকটা কেমন।
চিনতে পারল যখন তার গর্ভে সন্তান আসার কথাটা সে তাকে বলল। অরি একেবারে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল।—এরই মধ্যে বাচ্চা কী? তোমার পরীক্ষা আছে না? সংসারই বা চলবে কী করে?
—সংসার কী করে চলবে ভাবলে তো কোনওদিনই আমাদের বাচ্চা হওয়া চলে না। আর পরীক্ষা, ও আমি ঠিক চালিয়ে নেব।
বাড়িতে ঘোষণা হয়ে গেল কথাটা। তার পর শাশুড়ি শ্বশুর স্বামী সবাই মিলে তাকে ছি ছি করতে লাগলেন, যেন সে একটা অবৈধ সন্তান ধারণ করেছে। এরপর আর যা বলল তাতে তার আক্কেল গুড়ুম।
অরি বলল—সে যা হবার হয়েছে। টার্মিনেট করে দিলেই হবে।
—মানে?
—মানে জানো না! চলো খালাস হয়ে আসবে। একটা বেলার ব্যাপার। দিন তিনেক বিশ্রাম নিয়ে আবার নর্ম্যাল লাইফ।
—না। সে দৃঢ় কণ্ঠে জানিয়েছিল—বিয়ের তিন বছর পরে প্রথম সন্তান। কোন অপরাধে তাকে খুন করব। আমি পারব না।—এই নিয়ে রোজ জোরাজুরি কথা কাটাকাটি চলতেই লাগল, চলতেই লাগল। অবশেষে এল সেইদিন যেদিন অরি বেলা বাড়তেই অফিস যাবার জন্য তৈরি হচ্ছে না দেখে সে অবাক হয়ে কাছে গিয়ে কপালে হাত দিয়ে ছিল—জ্বর-টর হল না কি?
বিদ্যুৎ গতিতে তার মুখ চেপে বিছানায় শুইয়ে দিয়েছিল অরি। নাকে চেপে ধরেছিল, একটা রুমাল। তাতে মিষ্টি কেমন একটা অবাক করা গন্ধ। সে বুঝতে পারছিল তাকে চ্যাংদোলা করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ব্যস আর কিছু মনে নেই।
গভীর রাত হবে তখন। তার সামনে কড়কড়ে পোশাক-পরা একজন সিস্টার; তাঁকে দেখতে দেখতে সে যেন অনেকদিনের ঘুম ভেঙে জেগে উঠল। তার গায়ের ওপর সাদা চাদর টানা। সবুজ পর্দাটা দুলছে। সে তা হলে বাড়িতে নেই। অবশ্য তার বাড়িই বা কোথায়? সেন্ট্রাল পার্কের বাড়িটাও তার বাড়ি না, সল্টলেক পূর্বাচলের বাড়িটাও তার বাড়ি নয়। তার বাড়ি ছিল রমণী চ্যাটার্জি স্ট্রিট। সেই মিষ্টির দোকান, একদিকে পাহারার মতো সেই সরকারি ফ্ল্যাট, তাদের বাড়ির মধ্যে এক চিলতে লম্বা উঠোনটায় সার দিয়ে দিয়ে কত গাছ! এমনকি সুপুরি গাছও! টগর ঝোপে অজস্র টগর ফুটত সাদা তারার মতো। আর ছিল একটা মুসান্ডা। আর কী ছিল? নয়নতারা তো ছিলই, তুলসী ছিল, তুলসীর পাতা তুলে না ধুয়েই সে কচকচিয়ে খেত বলে মা কত বকেছে! তার আগেও তার বাড়ি ছিল মানিকতলায়। সেখান থেকে ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয়ে যেতে তার ঠিক দশ মিনিট লাগত। সেই বাড়িটাতেও টবের গাছ ছিল দোতলার হাফ-ছাদে। ছাদ-ভরা ফুল, বিশেষত গ্রীষ্মকালের। বাবা যত্ন করত, তাকেও শিখিয়েছিল। তবে যেহেতু তাকে সংসারের অনেক কাজই করে নিতে হত, গাছেদের ভারটা বাবা কোনদিনই তাকে দেয়নি। সেই বাড়ির যে ঘরে সে থাকত, তার একদিকের মেঝের সিমেন্ট একটু ভাঙা ছিল। ভাঙা জায়গাটার জন্য তার খুব খারাপ লাগত। বন্ধুরা আসবার কথা থাকলেই সে জায়গাটাতে একটা শতরঞ্চি পেতে রাখত। সেই বাড়িগুলো তার। তাদের সঙ্গে তার কত সুখস্মৃতি, কত তুচ্ছ ব্যর্থতা, কত তুচ্ছ সুখ, কত শোকতাপের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। মানিকতলার বাড়িতে তার ঠাকুমা মারা গেলেন। ছোট্ট সে তখন। কতদিন পর্যন্ত আশা করে বসেছিল ঠাকুমা আকাশ থেকে নেমে আসবেন, আবার তাকে মালঞ্চমামার গল্প বলবেন, কিংবা সেই একঠেঙে পেত্নী আর থালুমালুর গল্প। রমণী চ্যাটার্জি থেকেই তার বিয়ে হল। মা-বাবার নিত্য কথা কাটাকাটি। বাবা কিছুতেই বিয়ে দিতে রাজি নয়, মায়ের করুণ মিনতি। বাবা রেগে যেত, কেন তুমি শুয়ে থাকতেই কি ও সংসার পড়াশোনা সামলাচ্ছে না? ও পড়বে, প্রোফেসর হবে—তার পর আবার বিয়ের ভাবনা কী?
মা বলত—না গো, কুমারী মেয়ে একবার বাড়ির সংসারে জড়িয়ে পড়লে আর বিয়ে করতে পারে না। এ রকম আমি অনেক দেখেছি। আমি চলে গেলে মাতৃহীন মেয়েটার যে কী দুর্গতি… বলতে বলতে মায়ের কণ্ঠরোধ হয়ে যেত। সুন্দর চোখদুটো জলে ভরে উঠত।
বাবা বলত—দুর্গতিটা কি ওর আমিই করব? আমিই নিজের স্বার্থে ওকে বেঁধে রাখব বলছ? বাঃ।
—না, না। তুমি রাখবে না, ও ভীষণ দায়িত্বশীল মেয়ে, ও নিজেই তোমাকে ছেড়ে যেতে পারবে না। মাতৃহীন মেয়ের অনেক সমস্যা..
—আরে বাবা পিতৃহীন তো আর হবে না?
—যদি তা-ও হয়! মানুষের জীবন, কে বলতে পারে?
এই রকম কথা কাটাকাটির মধ্যে অমৃতা একদিন ঢুকে বলেছিল—ঠিক আছে। ঠিক আছে। বাবা কথা বাড়িও না। আমার বিবাহ না উদ্বাহ দিয়েই দাও। রোজ রোজ অশান্তি ভাল লাগে না।
তবে অমৃতার পছন্দ ছিল অধ্যাপক বর। তার বাবা আবার যেহেতু শিক্ষাজগতে আছেন, তার ঘাঁত ঘোঁত জানেন, তাই সে জগতের মানুষদের খুব শ্রদ্ধার চোখে দেখতে পারতেন না। বেশি কথা নয়, সংক্ষেপে বলতেন,—ওঃ লেকচারার, কলেজের? ওদের আমি চিনি।
তিনিই দেখেশুনে ঠিক করলেন এঞ্জিনিয়ার জামাই। মা-বাবা ছাড়া বাড়িতে কেউ নেই। দিদির বিয়ে হয়ে গেছে। শাশুড়ি এখনও চাকরি করছেন। স্কুলের টিচার। নিজেদের নতুন ফ্ল্যাট সেন্ট্রাল পার্কে।
অমৃতার পড়াশোনা নিয়ে কথা বলতে শ্বশুর বলে উঠেছিলেন—অবশ্যই। ও ভাল মেয়ে। পড়াশোনা করবে। চাকরি করবে, সেটাই তো আমরাও চাই।
ব্যস, আর কোনও কথার দরকার হয়নি। লাখ কথা ছেড়ে একটা কথাও বোধহয় হয়নি, এত সহজ সরল ছিল বিয়েটা।
অরিসূদনকে অপছন্দ হবার মতো তো কিছু ছিল না। তবে হ্যাঁ, একটা মানুষকে দেখেই, বা তার সঙ্গে দুটো কথা বলেই যে অনেক সময়ে একটা টান তৈরি হয়, তেমন কিছু হয়নি। অমৃতার তো তেমন আবেগপ্রবণ স্বভাবও না। হয়তো অরিসূদনের ব্যাপারটাও তাই। তার বন্ধু দোলা যেমন সহজে প্রেমে পড়ত, কি ছেলেদের কি নিজের মেয়ে-বন্ধুদের, অমৃতার প্রকৃতিটাই তেমন ছিল না। সে ধৈর্যশীল, সহনশীল, প্রতীক্ষা করতে প্রস্তুত।
অরিসূদন তার পেশায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত থাকত। অমৃতাও তার পড়াশোনায় ও সংসার-কর্মে। তার ওপরে শাশুড়ির ছিল ওই রোগ। ছেলেবউকে একা হতে দেবেন না। অরি বলল—চলো, “ফায়ার” এসেছে দেখে আসি। শুনছি খুব ভাল। শাশুড়ির কান এদিকে, বললেন, আমারও একটা টিকিট কাটিস। দেখতে দেখতেই এমন ‘ছি ছি ওয়াক থুঃ’ আরম্ভ করলেন যে তিনজনে হল থেকে বেরিয়ে আসতে পথ পায় না।
কিশোরী আমনকর-এর গান কলামন্দিরে। অমৃতাই বলল—শোনাও না গো। আমার ভীষণ ভাল লাগে আমনকর।
ক্ল্যাসিকাল গান শাশুড়ি ভালবাসেন না।
বেরোবার সময়ে কিন্তু ওঁর এমন পেটের যন্ত্রণা শুরু হল, যে অরিকে ডাক্তারের কাছে ছুটতে হল। দ্বিতীয় পর্বে ওরা পৌঁছল বটে, কিন্তু পেটব্যথাক্রান্ত শাশুড়িকে, সে ডাক্তার ডেকে দেখিয়ে হলেও, ওরা যে গান শুনতে গেছে, সেই রাগ কতদিন যে ভদ্রমহিলা ভুলতে পারলেন না! অরি তখন বলেছিল—এক ছেলের মা হলে, বউ-এর ওপর ভীষণ জেলাসি হয়, বুঝলে?
—জানতেই যখন, তখন বিয়েটা না করলেই পারতে!
—ইস্, মা জেলাস হবে বলে আমি বিয়ে করব না? বলতে বলতে রাতের অন্ধকারে জানলা দিয়ে আসা রাস্তার আলোর আবছায়ায় তার দিকে গভীর করে চেয়ে ছিল অরিসূদন। তার হাত চলে গিয়েছিল অমৃতার নাতিপিনদ্ধ বুকে। তারপর যা হয়! কে জানে সেই দিনই সাবধান হতে ভুলে গিয়েছিল কি না অরিসূদন গোস্বামী।
একজন ভদ্রলোক ঢুকছেন। নীল শার্ট কালো প্যান্ট। একটু ভারী চেহারা। লম্বার জন্য ভারী ভাবটা মানিয়ে গেছে। ফর্সাটে ভারী মুখ। একটু চৌকো ধরনের, জে.বি.-র মতো। চোখে সোনালি ফ্রেমের চশমা। কে ইনি? —ও ডাক্তার। গলায় তো স্টেথোস্কোপ ঝুলছেই।
—সিস্টার, পেশেন্টের ঘুম ভেঙেছে?
—হ্যাঁ।
—আপনি একটু কাইন্ডলি বাইরে যান।
—হ্যাঁ,—বেডের পাশে চেয়ার টেনে বসে পড়েন ডাক্তার—আপনি এখন কেমন ফীল করছেন?
—ভাল।
—সম্পূর্ণ সজাগ?
—মনে তো হচ্ছে।
—শুনুন, যখন পূর্ণ সজাগ ছিলেন না, সে সময়ে আপনাকে কয়েকটা কথা জিজ্ঞেস করেছিলাম। কতকগুলো ইনফর্মেশানও দিয়েছিলাম। মনে করতে পারছেন কিছু?
—না। আমার অ্যাবরশন কি হয়ে গেছে?
—কেন? আপনি অ্যাবরশন চেয়েছিলেন?
—না। হয়েই যখন গেছে তখন…
—তা হলে আপনার স্বামী, স্বামীই তো৷
—কে? অরিসূদন গোস্বামী?
—হ্যাঁ
—হ্যাঁ, ওঁর সঙ্গেই আমার বিয়ে হয়েছিল।
—মাফ করবেন, এত অদ্ভূত অদ্ভূত সম্পর্ক নিয়ে এখানে লোকে আসে, তাই কথাটা জিজ্ঞেস করলাম। আচ্ছা, ওঁরা কেন অ্যাবরশন চাইছিলেন?
—আই হ্যাভ নো আইডিয়া।
—তবু?
—ওরা আমার পড়াশোনার ব্যাঘাতের কথা বলেছিলেন। তা ছাড়া সংসারে আমাকে প্রচুর কাজও করতে হয়।
—আই সি। তা আপনি তাতে ওঁদের কী বললেন?
—আমি বলি—পড়াশোনা পরীক্ষা এসব আমি সামলে নেব। সংসারও। তবে সংসারের কাজ থেকে দশ-বারোদিন কি এক মাসের ছুটি দিতে হলে যদি বাচ্চা না হতে হয়, তো ওঁদের পরিবারে বাচ্চা কোনও দিনই আসবে না—এই জাতীয় কিছু।
—তা প্রেগন্যান্সির সময়ে আপনি মাঝে মাঝে অজ্ঞান হয়ে যেতেন?
—অজ্ঞান? আমি জীবনে কখনও অজ্ঞান হইনি ডক্টর। ওই একবার ছাড়া। কী বলব! আপনাকে বলে কী লাভ?
—লাভের কথা পরে ভাববেন। ডাক্তারকে কিছু লুকোবেন না।
—আমার স্বামী আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল, কী যেন দিয়ে আমার নাক-মুখ চেপে ধরল—আর কিছু আমার মনে নেই।
—ওরা অজ্ঞান অবস্থায় এখানে আপনাকে নিয়ে আসেন—বলেন, কনসেপশনের পর আপনার প্রায়ই ফিট হচ্ছে। তাই ওঁরা বউমাকে অ্যাবরশন করাতে নিয়ে এসেছেন। আগে তো বউমা বাঁচুক, তারপর নাতিপুতির কথা ভাবা যাবে।
—শিট!
—কী বললেন?
—কিছু না, বললাম ছিঃ।
—তা ওঁদেরই নাতি, ওঁদের না চাওয়ার কী কারণ থাকতে পারে মিসেস গোস্বামী।
—আমি বুঝতেই পারছি না।
—শুনুন, আমি যতটুকু বুঝেছি ইউ আর ইন সীরিয়াস ডেঞ্জার। আমি বুঝেছিলাম আপনাকে ক্লোরোফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করা হয়েছে। তারপরে আপনার সব রকম মেডিক্যাল টেস্ট করাই। অস্বাভাবিক কিছু পাইনি। এদিকে আপনার চার মাস কমপ্লিট হয়ে গেছে। এখন এম.টি.পি করা খু-উব রিস্কি। আপনার প্রাণসংশয় হতে পারে। সুন্দর একটি মেল ভ্রূণ এসেছে আপনার গর্ভে, আমরা অ্যামনিও সেনটেসিস করে দেখে নিয়েছি। কোনও অস্বাভাবিকতা তার নেই। আপনি যদি এঁদের কাছে ফিরে যান, কোনও বাজে ক্লিনিকে অসাধু হাতুড়ের কাছে নিয়ে গিয়ে এরা আপনার গর্ভপাত করাবেই। আপনি তাতে বাঁচবেন না। প্লিজ ডোন্ট গো ব্যাক টু দেম। আপনি আপনার বাপের বাড়ির ঠিকানা বলুন, আমি এক্ষুনি আপনাকে সেখানে পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করছি।
—আমি এভাবে চলে গেলে আপনাদের তো বদনাম হবে, পুলিশ এনকোয়্যারি হবে?
—থ্যাংকিউ ফর স্পেয়ারিং সো মাচ থট ফর আস। আমরা ওগুলো সামলে নেব। আপনি চলে যান। সকাল হলেই হয়তো বন্ড সই করে পেশেন্ট নিয়ে যাবার জন্য জোর করবে। অলরেডি একবার করেছে।
সে শিউরে উঠল।
—ভয় পাবেন না। ঠিকানাটা বলুন।
—শুনুন আমার মায়ের দীর্ঘদিনের হার্টের অসুখ। বাবাকে একা সব সামলাতে হয়। ওঁরা…ওঁরা খুব দুর্বল। ওখানে আমি যাব না।
—তা হলে?
—তা হলে…তা হলে দুটো ঠিকানা আপনাকে বলছি, কেউই আমার আত্মীয় ওখানে কেউ আমাকে খুঁজে পাবে না। সেটা ঠিক হবে তো?
—পুলিশ-কেস হবে। হোক। তখন তো সত্য বেরিয়ে পড়বে, অপরাধের শাস্তি হবে। করুক না কেস।
—তা হলে একটা ঠিকানা বলছি জয়িতা বাগচি, ওয়ান-এ এইট্টি থ্রি, সেক্ট-৩, সল্টলেক সিটি। আর একটা হল ৫/বি ডোভার লেন।
—এগুলো কার ঠিকানা?
—প্রথমটা আমার এক প্রোফেসরের, দ্বিতীয়টা আমার এক বন্ধুর। সে অবশ্য এখন কানপুরে, কিন্তু তার মা আমাকে খুব ভালবাসেন।
—শুনুন মিসেস গোস্বামী…
অবরুদ্ধ ক্রোধ এবার প্রকাশ পেল তার গলায়।
—বারবার মিসেস গোস্বামী বলে আমাকে অপমান করছেন কেন? —আমি অমৃতা
—নিশ্চয়ই, ডাক্তার ঝুঁকে পড়লেন একটু, বললেন হ্যাঁ অবশ্যই, আপনি তো অমৃতাই।