অমূল্য উপহার
দুজনের এক ভ্যালেন্টাইন দিনেই হয় আলাপ।এই
দিনটিকে স্মরণ রাখার জন্য পরের ভ্যালেন্টাইনে
করেন বিয়ে। বেশ ভালোই মজায় চলছিল সংসার। কোনো রকম অশান্তি ছিল না তাদের।
হঠাৎই অটোইমিউনো কিডনি ডিজিজ (autoimmune disease) দেখা দিল রিতার শরীরে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সে হারায়। রিতার কিডনিতে বাসা বেঁধেছে এই রোগ৷ চিকিৎসা চলছে তবে উন্নতির কোনও লক্ষণ নজরে আসেনি চিকিৎসকদের।
ফলে অস্ত্রোপচার ছাড়া কোনও উপায় নেই।
স্ত্রী রীতার কিডনি ক্রমশঃ খারাপ হয়ে যাচ্ছিল।
কারো সাহায্য প্রত্যাশা না করে এই অবস্থায় স্ত্রীর জীবন বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসেন বিনোদ। তাঁদের দু’জনেরই শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করে দেখার পর চিকিৎসকরা কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয়ে সম্মতি জানান।
একটি বেসরকারি হাসপাতালে ঠিক হয় অস্ত্রোপচার করে রীতার শরীরে প্রতিস্থাপন করা হবে তাঁর স্বামী বিনোদের কিডনি।
জানা যায় এই প্রথমবার চিকিৎসকরাও ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে অস্ত্রোপচার করে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে চায়।
বিনোদ জানান, ‘আমার স্ত্রীর এক মাস আগে ডায়ালিসিস শুরু হয়। ওর যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আমি কিডনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। স্ত্রীকে আমার কিডনি দেওয়ার মাধ্যমে আমি সমাজে এই বার্তা দিতে চাই, সবারই সঙ্গীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত এবং প্রয়োজনের সময় একে অপরের পাশে থাকা উচিত।’
স্বামীর প্রতি নিজের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন স্ত্রীও৷ তিনি বলেন যে এমন স্বামী থাকার ফলে তিনি মনে জোর পাচ্ছেন এবং নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করছেন৷ “আমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হত৷ আমার স্বামী জানান যে তিনি আমায় কিডনি দান করবেন৷ তাহলে আমরা দু’জনেই বাঁচব এবং একসঙ্গে সুখে সংসার করতে পারব৷ আমি আমার স্বামীর প্রতি খুবই কৃতজ্ঞ”,
স্বামীর একটি কিডনি পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করছি।
ভ্যালেন্টাইন ডে তে অনেকেই প্রিয়জনদের নানা উপহার দেন।
২৫তম বিবাহবার্ষিকীতে এর চেয়ে মূল্যবান ভাল কোনও উপহার আর হতে পারে না।
তাই স্ত্রীকে বাঁচাতে নিজের শরীর থেকে কিডনি দিলেন স্বামী৷ ভ্যালেন্টাইনস ডে-কে সাক্ষী রেখে হল অঙ্গদান৷ এভাবে এই বিশেষ দিন এবং ২৫ তম বিবাহবার্ষিকী উদযাপন হল৷