ধূসর স্মৃতিময় নিশ্চিন্দিপুরের পথখানি ধরে
আমার ব্যাকুল তিয়াসে হেঁটে চলা
রাঙামাটির ধূলোতে আমার পায়ের আলিম্পন,
দূরে হিজলের ছায়া যেন রোদ্দুরে শীতল আঁচল
আম জাম কাঁঠাল গাছেরা জটলা করে দাঁড়িয়ে
কান পেতে রুদ্ধ নিঃশ্বাসে শুনছে বুঝি পরিচিত পদধ্বনি,
একপশলা উদোম বাতাস গায়ে মুখে আছড়ে পড়ে,
যেন বহুদিন পর আপনজনের সোহাগী ছোঁয়া পেলাম,
মেঠোপথটা ধরেই এগোচ্ছি স্মৃতির দোলায় –
কখনো অপু বাঁশের ভেঁপু বাজিয়ে,
কখনো দিদি দুর্গার সাথে ফড়িং ধরার খেয়ালে,কখন পানাপুকুরে বিল ছুঁড়ে জলের মাতন দেখার রঙে,
ওইতো- দুরন্ত অপু ছুটছে– পিছনে ছুটছে দুর্গাও
নিশ্চিন্দপুরের বাতাস কেটে ভেসে আসা কু- ঝিক ঝিক আওয়াজে-
রেলগাড়িটা ধীর মন্থর গতিতে মিষ্টি কু- ঝিক শব্দ অপুকে টানতে থাকে চুম্বকের মত-
নদীর পাশ কেটে মাঠের আলপথে ছুটে চলেছে
অপু – দুর্গা রেলগাড়িটা দুচোখ ভরে দেখবে বলে
ইসস, মাঠের মাঝে আচমকা হোঁচট খেতে দৃশ্যগুলোর রূপান্তর
কোথায় অপু- দুর্গা!
তাকালাম চারপাশে,নাহ্ কোত্থাও নেই,
তাই,নাই থাক,সেই মাঠ,ধূলোমাখা পথ,নদীতীরে কাশের দোলা আর,রেলগাড়ির কু-ঝিক তো আছে,
তাহলে,অপু – দুর্গাও ওদের মাঝেই মিশে আছে আজো,
আর আছে বলেই না সময়ের স্রোত মতোই বয়ে যাক না কেন,পথের পাঁচালী হৃদয়ে মননে অপু- দুর্গাকে লাখো মানুষের মনে জিইয়ে রেখেছে,
তাইতো,পরম সুখানুভূতির আবেশ বিহ্বলতা নিয়ে হাঁটতে থাকি ,
কেন যেন মনে হয়,অপু- দুর্গাও আমার পাশে পাশে হাঁটছে
এক অনির্বচনীয় পুলকে ঘোরের মধ্যে আমি যেন কত কথাই না বলতে থাকি ,আর,অপু- দুর্গাকে আঁকতে থাকি হৃদ মাঝারে কল্পনার রঙ- তুলিতে-