ঘুমের ভেতর প্রায় রোজই এসে দাঁড়ায় কে এক
অচিন মানুষ; চেয়ে থাকে
প্রগাঢ় আমার দিকে কিছুক্ষণ, জাফরানি-রঙ
আলখাল্লা তার
হাওয়ায় ঈষৎ কাঁপে। বাউল বলেই চিনি তাকে,
হাতে একতারা, কাঁধে ঝোলা।
অনুরোধ করি না, তবুও কণ্ঠে মধুর খেলিয়ে দেয় সুর
অবলীলক্রমে, মুগ্ধতায় স্নান করে দেহমন।
ঘুমের ভেতর স্বপ্নে নাকি বাস্তবেই
এসে যায় সে বাউল আমার নিকট,
বোঝা দায়; শুধু আমি সুর হয়ে যাই
জাফরানি-রঙ আলখাল্লা আর একতারার কম্পনে, এই
বিশ্বাসে উদাস বাউলকে কখনও সাধক গুরু,
কখনও বান্ধব বলি, কখনওবা সখা।
আজ অব্দি একটিও কথা উচ্চারণ
করেন নি তিনি,
কেবল আমার দিকে তাকিয়ে থাকেন
উদার দৃষ্টিতে, সেই দৃষ্টি স্পর্শ করে
অন্তরের পাতাল আমার, কখন যে তার সুর
আমার নিজেরই সুর হয়ে
উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিমকে আলিঙ্গন করে
তা বোঝার আগেই আমার
গায়ে জাফরানি-রঙ আলখাল্লা, হাতে একতারা,-
এবং আমার দ্বৈত সত্তা নক্ষত্রসভায় নৃত্যপর শুধু।