হেমন্তিকা
হিমের রাতের আকাশ প্রদীপ শুধায় আমায় ডেকে,,,,,
”আসছে কি সে, মৃদুল পায়ে,সবায় ভালবেসে?
চতুর্দশীর চোদ্দ পিদিম,চৌকাঠে বসিয়ে
বরণ করি সোনার ধানে,আলোকমালা দিয়ে॥
হিম ঋতুরশুরু আমাকেস্মৃতিমেদুর করে তোলে॥
ফেলে আসা ছেলে বেলার মিষ্টি স্মৃতির
টানে,বার বার ফিরে যাই সেখানে॥
চোদ্দপিদিম,ধানের ছড়া,আর লক্ষীর পঁাচালির মুগ্ধতায় ডুবে যেতে
থাকি!নাগরিক যান্ত্রিকতায় ব্যথিত অন্তরে মলমের
প্রলেপ
ফেলে এই ঋতু! এযে উৎসবেরঋতু!মাঠ ভরা ফসলে প্রকৃতি সেজে ওঠে!আর পরিযায়ী পাখিদের
ডানায় ভর করে আমার বাউল মন উড়ে চলে অচিন পুরে॥ হেমন্তিকার কুয়াশা ভেজা হিমেল আঁচলমনকে আবিল করে তোলে॥বা র বার ফিরে যাই সেই ছোট্ট বেলার পরান কথায়,,,,,পৌষসংক্রান্তির খামার পূজোয়, কিংবা টুসু পরবের গানে॥মনে পড়ে ইতু পূজোর মিলন মেলা॥ইতুর সরার গাছ গুলোকেমন তর তর ক
রে বেড়ে ওঠে ঠিক আমাদের কিশোরী বেলার মত!
শীতের সকালে বাগানের গাছে যখন ইস্টিকুটুম
পাখীটা ডাকে,,,,,,,মনেপড়ে এই ডাক শুনলে ঠাম্মি
কপালে জোড় হাত ঠেকিয়ে বলতেন,,,” ঠাকুর যেন সবাই ভালো থাকে॥”,,,,,,
এই আন্তরিক প্রার্থনা
তো আর শুনি না!!
অঘ্রান মাসের রবিবারে ইতুর পূজো!! ইতুর সরাতে
পুকুরের মাটি দিয়ে তাতে ধান,হলুদ,কচু,মান,মটর,সরষে,সুষনিও কলমী গাছ লাগানো হয়॥
প্রতিদিন ওতে জল দিতাম! রবিবার ঐ সরাতে গঁাদা ফুল দিয়ে পূজো করতাম সব ব্রতী মিলে!!
সবাই এক জায়গায় মিলিত হয়ে পূজো করতাম॥
পূজোর মন্ত্র মেয়েলী ছড়া॥মেয়ে দের আন্তরিক
কামনা সং সারের মঙ্গল,স্বামী,সন্তানের মঙ্গল ই এই
ব্রতের উদ্দেশ্য॥মেয়ে দের একান্ত নিজস্ব চাওয়া
পাওয়ার আকাঙ্খাই এর বহিঃ প্রকাশ এই ব্রত!!
ভারী সুন্দর মিলন উৎসব ছিল এই ইতু ব্রত॥
এখন আমরা কতই আসর,মজলিস, মিলনমেলা
করিকিন্তু তাতে প্রানের ছোঁয়া থাকে না!আন্তরিকতার বড় দৈন্য এখন! তাইতো হিম ঋতুর
আগমনী আমাকে সোনালী কিশোরী বেলায় ফিরিয়ে নিয়ে যায়,,,,,,, তাইতো,,,,”ভুলি কেমনে
আজও যে মনে
বেদনাসনে রহিল আঁকা॥”