সফলতার সাফল্য সবার, ব্যর্থতার দায়ভার নিজের
আমি মনে প্রাণে যা বিশ্বাস করি তা হল সাফল্য সবার, কিন্তু ব্যর্থতা আমার, শুধুই আমার। সারা জীবন ধরে যা কিছু শিখেছি আমি, যা কিছু লিখেছি আমি, সবাকার মনে যতটুকু দাগ দিতে পেরেছি গো আমি, জানি আমি জানি, সাফল্যের চূড়াখানি দূরে অতি দূরে রয়ে যায়, সুদূরে মিলায়,তবু ডাকে সে আমায় অদ্ভূত ঈশারায়। মনে ভাবি আর কতদূরে নিয়ে যাবে মোরে হে সুন্দরী, সাধনা আমার, কবে আর দেবে ধরা, ব্যর্থতার সুকঠিন প্রাচীরে যে মাথা কুটে যায়, শীর্ণ দেহ কষ্টেসৃষ্টে টানি। আজ যবে আমি সাফল্যের শিখরে উঠে আনন্দে মেতে উঠি, পরমানন্দের ভাগ সবে বেঁটে লয় জানি, তবু নেচে ওঠে মন, সুদূরের হাতছানি, সে বিস্ময় মানি,পত্র পুষ্পে ধূপ দীপে হয় সেই নিবেদন খানি, চিত্ত শুদ্ধ হয়, হৃদয় দেবতা মোর পরিতুষ্ট হয়, জীবাত্মার বাজে শঙ্খধ্বনি। সাফল্যের ধর্মপূজা সমাপন মানি।
একি, এ কাহার ছায়া দেখি, সাফল্যের পরপারে করুণ ব্যর্থতা ঘিরে, শুনি কার অমঙ্গল ধ্বনি। কে যেন গো বলে যায় নিষ্করুণ ভঙ্গীমায়, ডেকে বলে, কি কথা লেখোনি গানে কি সঙ্গীত রব স্তব্ধ হয়ে থেমে যায় বিশ্বলোক হতে। আমি সেই ব্যর্থতার দায় নিজে মানি। সে যে শুধু আমারি, সে ক্রন্দন ধ্বনি, হাহাকার রবে, নিনাদিত হয় যবে এ বিশ্বসংসারে, আমি তার দায় নিজে মানি। যে সাফল্যের জয়ধ্বজা উড়ায়ে আপনি, ধাই বিশ্বলোকে, বিশ্বভ্রমি, সেই আমি, ব্যর্থতার দায় মেনে লিখিনু কবিতা খানি, আমার কবিতা আমি জানি, গেলেও বিচিত্রপথে হয়নাই সে সর্বত্রগামী।
শেষে বলি, ভরা থাক, স্মৃতি সুধায় বিদায়ের পাত্রখানি। যে যুদ্ধে জিতেছি আমি, সাফল্যের সফলতা বিশ্বজয় দিয়েছিল আনি তবু বলি, সায়াহ্নের বিদায় বেলাতে, এই খেদলিপি, ব্যর্থতার পরাজয়ে, ক্লান্ত হই, ক্লান্ত হয়ে থামি। আত্মার আত্মীয় সেই জীবন প্রভুকে বলি শুধু , ক্লান্তি আমার ক্ষমা কর প্রভু, পথে যদি পিছিয়ে পড়ি কভু। হে জীবনস্বামী, সাফল্যের জয়টিকা এঁকে দিও সবাকার ভালে, ব্যর্থতার দায়ভার দিও শুধু আমার কপালে।