মধ্যরাতে অকস্মাৎ একজন বীর, দীর্ঘকায়,
বর্মাবৃত, দুধসাদা ঘোড়ায় সওয়ার,
মহাকাব্য থেকে নেমে আসে
শহরে প্রধান সড়কে।
তার শিরস্ত্রাণের আড়ালে
দু’টি চোখ যেন
খাঁচাবন্দী পাখি;
প্রায় ফাঁকা পথ,কয়েকটি লোক ঘুমন্ত রাস্তায়।
কী স্বপ্ন দেখছে ওরা? হাওয়া ব’য়ে যায় নিরিবিলি
ওদের ওপর, কেউ অবছা শব্দ করে স্বচ্ছ ঘুমের ভেতর,
বর্মাবৃত বীর সূর্যোদয় আনে বর্শার ডগায়;
তাকে দেখে বহু লোক পথে জড়ো হয়।
কে সে, কে সে, কে সে-
এই প্রশ্ন প্রত্যেকের চোখে পরিস্ফুট।
কেউ কেউ কিছুটা সমুখে গিয়ে পিছু হ’টে আসে
অজানার ঘ্রাণ পেয়ে। লোকদের
আচরণ দেখে বর্মাবৃত বীরটির
ঠোঁটে কৌতুকের হাসি খেলে যায়; হায়, এরাই কি
অন্ধকার চিরে জ্যোতির্ময় দ্বীপরেখা এঁকেছিল?
স্বেচ্ছায় হারাবে ওরা আত্মদানে লব্ধ রত্নদ্বীপ?
মহাকাব্য থেকে নেমে-আসা বীর টগবগে ঘোড়া
ছুটিয়ে অনেক দূরে পৌঁছে যায় নদীর কিনারে,
ফিরে আসে শস্য থই থই মাঠে, দ্যাখে
কারা বুকে নিবিড় জড়িয়ে ধানচারা
নতুন স্বপ্নের টানে নীলিমাকে ছোঁয়;
যৌবনের গানে নাচে তালে তালে স্বর্ণপ্রসূ মাটির ওপর
সুন্দর স্পর্ধায়; ফসলের প্রভু ওরা,
অথচ নিরন্ন ভূমিদাস।