বিষন্ন দুপুর
দুপুরের একটা আলাদা সৌন্দর্য আছে। একটা আদুরে সময় যে ঋতুচক্রের রঙ্গিন সময়ের সাথে সাথে রং বদল করে। তবে যে কোন ঋতু হোক না কেন এই সময় একটা পেলব বিষন্নতার চাদরে মোড়া থাকে। এর সৌন্দর্য কেউ অনুভব করতে হয় অন্তর মনদিয়ে।
বৈশাখী রৌদ্রতপ্ত দুপুর বিষন্নতার চাদরে ঢাকা। নিদাঘি দুপুরের নিস্তব্ধতাকে চিরে মাঝে মাঝে শোনা যায় চিলের তীক্ষ্ণ স্বর। কুবোর কুব কুব ডাক দুপুরের রোদ কে চমকে দেয়।
বর্ষার মায়াবী আঁধারে ঢাকা দুপুর কেমন যেন নেশা ধারায়। হঠাৎ করে জল চুডি ওড়নায় মুখ ঢেকে ফেলে। মেঘের মাদলের গুরুগুরু ধ্বনির সাথে বৃষ্টিধারার জল তরঙ্গ সংগত করে।
শরতের আবেশী দুপুরের সুনীল আকাশে চক্কর কাটা গেরো বাজের ডানায় মনকে বসিয়ে অসীম শূন্যে উডান টানে খেয়ালী মন। ছুটির বাঁশির অমোঘ টানে মন ছুটে বেড়ায় সুনীল মহানভ অঙ্গনে।
শীতের দুপুর আদুরে আলস্যে মোডা। মিষ্টি রোদের আমেজ মনকে চনমনে করে তোলে। মৌসুমি ফুলের রঙিন ছোঁয়ায় পরশ লাগে ঘরবিবাগী মনে। বন্ধ ঘরের আগল ভেঙ্গে সে চায় বেরিয়ে পড়তে পরিযায়ী ডানাকে সম্বল করে।
বসন্তের দুপুর রঙ্গের নেশায় মাতাল। পলাশ কৃষ্ণচূড়ার লালিমা মাখা নীল দিগন্তে ফুলের আগুন লাগার সময় মনকে মাতিয়ে তোলে। মহুয়ার সুবাস মাখা বাতাসটা যেন নেশার আবেশে আবিল।
ঋতুচক্রের আবর্তনে সাথে সাথে দুপুরে র রূপের কি অপূর্ব পরিবর্তন। এই আবেশি সময় মানব মননে সৃষ্টি করে এক অমোঘ মায়ার। তাই দুপুর শুধু বিষন্নতা মাখা সময় নয় এ যে শিল্পী মনের কল্পনা কে উদ্দীপ্ত করার মায়াবী সময়।