এমনই অপরাধী, মানবতার এমনই শত্রু আমি,
এমনই কি দেশদ্রোহী যে দেশ বলে কিছু থাকতে নেই আমার।
দেশই তবে কেড়ে নেবে আমার বাকিটা জীবন থেকে আমার স্বদেশ।
দেশ দেশ বলে অন্ধের মতো উত্তর থেকে দক্ষিণ গোলার্ধ
পাহাড় সমুদ্র আর সারি সারি বৃক্ষ
অন্ধের মতো আকাশচাঁদ কুয়াশা রোদ্দুর
অন্ধের মতো ঘাস লতাগুল্ম মাটি আর মানুষ হাতড়ে হাতড়ে দেশ খুঁজেছি।
পৃথিবী ফুরিয়ে অবশেষে জীবন ফুরোতে
দেশের তীরে এসে বসা ক্লান্ত পিপাসার্ত মানুষের নিশ্চিন্তিকে তুমি যদি
টেনে হিঁচড়ে তুলে নিয়ে যাও, আঁজলার জলটাও ছুড়ে দিয়ে
আমাকে মৃত্যুদণ্ড দাও, তবে কী নামে ডাকবো তোমাকে, দেশ?
বুকের ওপর মস্ত পর্বতের মতো দাঁড়িয়ে
বুটজুতোর পা দিয়ে গলা পিষছে, খুঁচিয়ে তুলে নিয়েছো দুটো চোখ,
মুখ থেকে টেনে বের করে নিয়েছে জিভ, টুকরো করেছে,
চাবুক মেরে চামড়া তুলে নিয়েছো,
গুঁড়ো করে দিয়েছো পা, পায়ের আঙুল, খুলি খুলে মস্তিস্ক থেতলে দিচ্ছো,
বন্দি করেছে, যেন মরি, যেন মরে যাই,
আমি তবু দেশ বলেই তোমাকে ডাকি, বড় ভালোবেসে ডাকি।
কিছু সত্য উচ্চারণ করেছি বলে আমি দেশদ্রোহী,
মিথ্যুকের মিছিলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তুমি চলবে বলে আজ আমি দেশদ্রোহী।
মানবতাকে যেন মাটি দিয়ে দিই নয়তো সাত আসমানে উড়িয়ে দিই–
তর্জনী তুলে বলে দিয়েছে।
আর যা কিছুই থাক বা না থাক, দেশ বলে কিছু থাকতে নেই আমার।
আমার জীবন থেকে, তুমি দেশ, হৃদয় খুঁড়ে নিয়ে গেলে আমারই স্বদেশ।