সাধারণ আমি ডালে ভাতে মধ্যবিত্ত!
সংগ্রাম আর সংগ্রাম অস্তিত্ব টিকয়ে
রাখার জন্য ছেলে বেলা থেকেই..
স্কুলে ভালো রেজাল্ট.. চেষ্টা আর চেষ্টা…
তারপর ভালো সরকারি চাকরি….
সব আনন্দ সুখ বিসর্জন দিয়ে
যন্ত্রনা নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়ে আমাকে।
সাধারণ আমি ডালে ভাতে মধ্যবিত্ত!
লাল,সাদা-নীল, সবুজ, গেরুয়া
জামা বদল করা নেতাদের আস্বস্ত
ভেজানো কথার সর্বহারাদের সুর
সুর তুলি আমিও জামা বদল করি।
সাধারণ আমি ডালে ভাতে মধ্যবিত্ত!
সকাল সন্ধ্যায় চায়ের দোকানে
চায়ের পেয়ালায় তুফান তুলে –
আমিই সবাইকেই আসামি
বানিয়ে বিচারক হই ,
অহংকারী আমি-শিক্ষার অহংকার।
সবজান্তা আমিই খেলাধুলা,সিনেমা
রাজনীতি থেকে সাহিত্য সব…
সাধারণ আমি ডালে ভাতে মধ্যবিত্ত!
আত্ম বিভোর আমি সাম্যবাদের চোখ দিয়ে –
এক সুতোয় বাঁধতে চাই সমস্ত পৃথিবীটাকে
সাধারণ আমি ডালে ভাতে মধ্যবিত্ত!
আমার আভিজাত্যের গন্ধ ছুঁড়ে দিতে চাই
তোমাদের মাঝে – মাতৃভাষা নয় বিদেশী
ভাষার বুলিতে ঠোঁট নাড়িয়ে ,
সাধারণ আমি ডালে ভাতে মধ্যবিত্ত!
আমাকে পাবে তুমি আন্দোলনে ধৰ্মঘটে-
মিছিলের আগে পতাকা হাতে।
ফুটপাতের সস্তার হোটেলে চোয়া ঢেকুরে,
আমাকেই পাবে তুমি সেলিব্রিটির সাথে,
সেলফি নিয়ে নিজেকে জাহির করার প্রয়াসে।
সেই আমাকেই পাবে তুমি পিকনিক করতে
বইমেলার প্রাঙ্গনে, ফিল্ম উৎসবে।
সাধারণ আমি ডালে ভাতে মধ্যবিত্ত!
ভিড়ের থেকে নিজেকে আলাদা
থাকতে চায় আমার স্বাভিমানী মন ,
অবসাদে ক্লান্ত বৃদ্ধ পিতামাত
বা পরিবারের চোখগুলোকে
তৃপ্ত করার জন্য প্রতিমুহূর্তে
সংঘর্ষ করে চলছি প্রতিদিন।
সাধারণ আমি ডালে ভাতে মধ্যবিত্ত!
দাঁতে দাঁত চেপে – ‘দিনগত পাপক্ষয় করে’
আজকের দিনটা বেঁচে থাকি
চালিয়ে নেবো কালকের লড়াইটাও,
রক্তবীজের মতো টিকে থাকতে চাই।
সাধারণ আমি ডালে ভাতে মধ্যবিত্ত!
আমার স্বপ্নের ফানুসটাকে ছোঁবার জন্যে
ক্লান্তিহীন ছুটে চলি আমি সকাল সন্ধ্যে,
ভালো থাকার নাটক করি অভাবে থেকেও
জাতপাত আর বর্ণের ভিড়ে নিজেকে
খুঁজতে খুঁজতে কিছুই পাওয়া হয়না।
সাধারণ আমি ডালে ভাতে মধ্যবিত্ত!