Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » কৃপণের দ্বিগুণ ক্ষয়,চুরি নাহলে ডাকাতি হয় || Sibani Gupta

কৃপণের দ্বিগুণ ক্ষয়,চুরি নাহলে ডাকাতি হয় || Sibani Gupta

মানুষে মানুষে আচরণ ও স্বভাবগত বিস্তর পার্থক্য দেখা যায়।
কিছু মানুষ মানবিক বোধে উদ্দীপ্ত,দয়ালু ও দানবীর,পরের বিপদে আপদে সহমর্মিতার হাত বাড়াতে দ্বিধা করেনা,এরা লোকজনকে খাওয়াতে ,সমাদর করতে ভালোবাসে।
আবার,কিছু মানুষ পুরো বিপরীত মেরুর।এদের আচরণে আত্মকেন্দ্রিক মনোভাব , এরা কখনো কাউকে কিছুখাওয়াবার,বা সাহায‍্য সহায়তা করার কথা ভাবতেই পারেনা। এরা নিজেদের জীবনেই কৃচ্ছ্রসাধনায় ব‍্যয় করে থাকে।
কৃপণ মানুষের ও নানা স্তর আছে।কেউ ব‍্যক্তিজীবনে কৃপণ,কেউবা সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে ঠিক সময়ে গিয়ে উদরপূর্তি করে খাবে কিন্তু উপহার দেবার ব‍্যপারে চরম কৃপনতা থাকে। কেউ কেউ আবার যক্ষের ধন জমাতেই মগ্ন থাকে ,নিজের পরিবারের ভরনপোষনে,ছেলেমেয়ের পড়াশোনাতে ,দারুণ শৈথিল‍্য ভাব রাখে ,যাতে তার অর্থ খরচ না হয়।
ভালোকরে নিজের আত্মজকে,পরিবারকে খেতে পড়তে দেয়না ।ফলে,কখনো হয়তো স্ত্রী বেচারী রক্তাল্পতায় কঠিন অসুখে পড়লো,কখনো বা ছেলেমেয়েরাই অপুষ্টির শিকার হয়ে মরণাপন্ন হলো ।ফলে, চিকিৎসা বাবদ বেশ কিছু টাকা মজুতভান্ডার থেকে খসে গেলো।
তাই,এতে যে তার কতো ক্ষতি হলো সেটা যদি আগে বুঝতো তাহলে তাকে এমন অবস্থায় পড়তে হতো না।
কৃপণ স্বভাবের মানুষেরা জীবনে কোন শখ আহ্লাদে টাকা খরচের কথা শুনলেই আঁতকে উঠে।যতো কষ্ট হোক হেঁটে যাবে,তবু সহজে রিক্সা চড়বেনা।রেলে সাধারন কামরাতেই যাবে,তবু আয়েশে আরামে টাকা খরচ করে রিজার্ভেশন কামরাতে যাবেনা।
অথচ,এই কৃপণ লোকেরাই তাদের কৃতকার্যের জন‍্য বেশীরভাগ সময়েই কৃপণতার জন‍্য যে মাশুল গুনে থাকে সেটা যে তার সব হিসেবের মাথায় চাঁটি মেরে তাকে বুঝিয়ে দিতে চায়,এতো অধিক কার্পণ‍্য মানুষকে শোভা পায়না।
এ বিষয়ে একটা কবিতা ও গল্প লিখেছিলাম,এক অতি কৃপণ মানুষ একদিন তার অফিসের বড়বাবুর মেয়ের বিয়েতে যাবে।যেহেতু বড়বাবুর মেয়ের বিয়ে,জাঁকজমক,এলাহি খাওয়ায় আয়োজন তো থাকবেই।
কৃপণ লোকটি বাড়িতে জানিয়ে দিল,তিনদিন বাদেই বিয়ে, সুতরাং এই তিনদিন উনুনে আগুন জ্বলবে না।তিনদিন পরে পেটের আগুন যখন লেলিহান ,তখন ,ইচ্ছামতো গাপুসগুপুস খাবে বিয়েবাড়িতে।আর,তারপরেও দুদিন খাওয়া বন্ধ।কৃপণের ভয়ে ছেলেমেয়ে, স্ত্রী চুপ।
পরদিন,ছেলেমেয়েরা ক্ষিদেতে কান্না জুড়লে মা বাধ‍্য হয়ে চাট্টি আলুভাতে বসাতে গেলো।তাই দেখে ,রাগে আগুন কৃপণটি উনুন ভেঙ্গে জল ঢেলে দিলো।
কৃপণটি উপহার কিনতে গিয়ে কুমোর পাড়া থেকে বেশ বড়োসড়ো মাটির ফুটো হাঁড়ি বারোআনাতে কিনে বাহারী প‍্যাকেটে সাজিয়ে পরিবার নিয়ে বিয়েবাড়িতে গেলো।
‘ধর্মের কল বাতাসে নড়ে’বলে প্রবাদটি এখানে ফলে গেল।বড়বাবু বড়লোক,মেয়ের বিয়েতে সামান‍্য অধঃস্তনদের খাবার ছিল বার্গার,স‍্যানড‍্যুইচ,দুটো মিষ্টি।
ছেলেমেয়ে, স্ত্রী খটমটে চোখে কৃপণকেই ভস্মীভূত করতে চায় পারলে।কৃপণের অবস্থাও ততোক্ষণে যথেষ্ট কাহিল।
বাড়ি এসেই সবাই অসুস্থ। চিকিৎসা বাবদে বহুটাকা গচ্চা গেলো ,বাচ্চারা মরতে মরতে বাঁচলো।
তাই,কৃপণের কৃপণতা কখনো শুভফল বহন করেনা।কৃপণের দ্বিগুণ ক্ষয়,এতো চুরি না হোক ডাকাতির মতন ব‍্যাপার!সঞ্চয় করতে গিয়ে উল্টে অত‍্যধিক কৃপণতার মাশুল তাদেরকে গুনতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *