কিছুই অচেনা নয়, এই ক্রোধ, ভাগবাটোয়ারা,
এ কুচকাওয়াজ, টিউনিক, এই প্রবল উত্থান,
কিছুই অচেনা নয়। মুখের বদলে অন্য মুখ,
চোখের বদলে চোখ, এখনও তো সেই চেনা রীতি।
এতটুকু স্বস্তি নেই; কনকচাঁপার দিকে চোখ
মেলে রাখলেও সাপ ফুঁসে ওঠে সর্বত্র কেবলি,
প্রাক্তন সন্ত্রাস পায় পরমায়ু নতুন সন্ত্রাসে।
নানান কংকাল আসে, বসে পাশে, কি করে বাঁচতে
হবে তারই পাঠ বারবার মুখস্থ করায় শুধু।
এই যে আপনি যান আপনিও যান মিছিলের
পুরোভাগে, আমি ঠিক থাকব পেছনে, বেগতিক
দেখলে চম্পট দেব যথারীতি। আমার তো আছে
ঘরময় পুষ্যি আর শেষাবধি যে কোনো কসরৎ
করে ক্ষ্যাপা ঘোড়ার কেশর ধরে ঝুলে থাকলেই
বাঁচবে আপন মাথা। অতএব পলায়ন, শুধু
পলায়ন জিন্দাবাদ বলে দেব ডুব সরোবরে?
কোথায় পালাব? স্বপ্নে? নাকি মনোহারি নিসর্গের
সবুজ কেল্লায় খুঁজব আশ্রয় নিরুপায়?
কিন্তু স্বপ্নভঙ্গ হয় ক্ষণে ক্ষণে, নিসর্গ নিজেও
সর্বদা অহিংস নয়, উপরন্তু এই জীবনের
আড়ালে জীবন যাঞ্চা করাটাই শিল্পিত বিকার
বলে কেউ লেখেন থিসিস, কিন্তু প্রাণ ধারণের
স্বাদ বাসি খাবারের মতো অল্প লেগে রয় জিভে।
অথচ কাটে না ভয় কিছুতেই, প্রহরে প্রহরে
আঁতকে উঠি পদশব্দে, চতুর্দিকে কী ভীষণ শক্তি,
অসুস্থ, উন্মত্ত, তোলে মাথা, যেন টিরানোসরাস।
ছাড়ুক হুংকার যত, আঁচড়াক মাটি, তছনছ
করুক নিসর্গ স্বেচ্ছাচারে, জানে না সে নিজে ক্ষয়-
চিহ্ন বয় নিজেরেই অস্থির খাঁজে খাঁজে অগোচরে।