Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » এক অন্য নারীর গল্প || Rimpa Laha

এক অন্য নারীর গল্প || Rimpa Laha

এক অন্য নারীর গল্প

আজ সারাদিন বৃষ্টি হচ্ছে অঝোরে । প্রকৃতির সাথে বিষাদ ঘিরেছে তমসার জীবনেও । সাত দিন কথা হয়নি রণির সাথে ।রণি হল তমসার দিদির দেওর । বছর দুয়েক হল বিয়ে হয়েছে দিদির । তখন থেকেই ওদের আলাপ । দিদির শ্বশুর – শাশুরি একদম ভালো মানুষ নয় । জামাইবাবু বাইরে থাকে । দিদিকে দিয়েই সব কাজ করান । অনুষ্ঠানের ত্রুটি হলেই জোটে লাঞ্ছনা- গঞ্জনা । দুদিন ছাড়াই দিদিকে বাপের বাড়ি পাঠানো হয় কিছু না কিছু চাহিদা নিয়ে ।জামাই ও বছরে একবার কি দুবার বাড়ি আসে । দিদি অনেকবার জামাইবাবুকে বলতে চেয়েছে এইসব কথা কিন্তু তার বিশ্বাস হয়নি । তাই তমসার মা – বাবা কোনভাবেই তাদের অপর মেয়েটিকেও জলে ফেলে দিতে রাজি নন ।
রণি হোস্টেলে থেকে পড়াশুনা করে । ব্যাপারটা জানাজানি হবার পর ওর বাবা – মা ওর ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন সম্পর্কটা থেকে সরে আসার জন্য । ওনাদের ইচ্ছা এবারে বেশ মোটা দেনা পাওনা সমেত বউ আনবেন । রণিও বেশ upset . সামনের সপ্তায় কলেজ ছুটি পড়বে । তখন মুখোমুখি কথা বলবে বলেছিল ।
রণির সাথে কথা না বলে থাকতে পারে না তমসা । বুকের ভিতর যেন একটা পাথর চেপে বসে । হঠাৎ তমসার সেলে রণির ফোন আসে । আজ বিকেলে পার্কে একবার আসবি ? তমসা – অঝোরে কেঁদে ফেলে ।কতদিন তোর গলাটা শুনিনি ।আমাকে কষ্ট দিয়ে তুই খুব আনন্দ পাস তাই না? বলে কান্নায় ভেঙে পড়ে সে । রণির গলাও ভারী হয়ে আসে । চুপ কর বলছি । তমসা – কষ্ট দেবার সময় মনে থাকে না । আচ্ছা আমার কথাটা শোন pls . বিকেলে আয় না তখন তো কথা হবে । এখন রাখি । কথামতো বিকেলে পার্কে যায় তমসা । সেখানে রণিকে দেখে নিজেকে সামলাতে পারে না । জড়িয়ে ধরে রণিকে । আমায় ছেড়ে যাসনা pls . রণি – আচ্ছা ঠিকাছে । শোননা আমরা ঐ বেঞ্চটায় বসে কথা বলি ।সবাই দেখছে ।
রণি তমসার হাতদুটো নিজের হাতে চেপে ধরে বলে আমি জানি তুই আমায় খুব ভালোবাসিস । আমিও বাসি । কিন্তু সব সম্পর্ক তো পরিণতি পায় না বল ? আমি চাই না তোর অবস্থাও বৌদির মতো হোক । তুই সারাজীবন কষ্ট পাস । তমসা – তাহলে আমায় নিয়ে পালিয়ে চল । তা হয় না । আমি এখনো stablish নই । কি খাওয়াবো তোকে । তাছাড়া আমারও কিছু দায়িত্ব আছে কর্তব্য আছে । তমসা – আর আমি ? রণি – ভুলে যা আমায় !! তমসা – হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে , কত সহজে বলে দিলি । ঠিক আছে আর কথা বাড়াবো না ।তুই যখন তাই চাস তাই হবে । আমি চলে যাব তোর জীবন থেকে । আর ডাকলেও আমায় পাবিনা কোনোদিন ।চোখের জল মুছতে মুছতে চলে যায় তমসা ।
এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ পাঁচ বছর । বেশ বড়লোক বাড়ির এক মেয়ের সাথে বিয়ে হয়েছে রণির ।রণির একটা ছোট্ট ফুটফুটে মেয়ে । শাশুরির দাবী বংশপ্রদীপ চাই । তাই তারা ইস্যু নিয়েছে । ডাক্তার বলেছেন যমজ সন্তান হবে । রণির মা কিভাবে যেন জানতে পেরেছেন ছোট বউ এর গর্ভে যমজ মেয়ে আছে । তাইএক তান্ত্রিকের থেকে একটা শেকড় এনে বেটে বউকে লুকিয়ে দুধে মিশিয়ে খাইয়েছেন বাচ্ছা নষ্ট করার জন্য । সেটা খাবার পরই বউ এর সারা শরীর বিষিয়ে নীল হয়ে যায় ।হসপিটালে দেওয়া হয় । কিন্তু মা ও সন্তান কাউকেই বাঁচানো সম্ভব হয় না ।
মেয়ের বাড়ি থেকে থানায় কেস করা হয় । ডিফেন্সের জন্য সবচেয়ে বড় উকিল ঠিক করা হয় । রণির মাকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় । সেখানে বিপক্ষীয় উকিলকে দেখে চমকে যায় রণি ।তমসা , এখনো অবিবাহিত — এত বড় উকিল । রণিকে দেখে ব্যাপারটা আরো ভালো করে বুঝে যায় সে । রণি তমসাকে হাত জোড় করে কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু থামিয়ে দিয়ে তমসা বলল সেদিন আমায় ছেড়ে দিয়ে ভালোই করেছিলি নয়তো ঐ মৃত্যু শয্যায় আজ আমি থাকতাম । আমি দেখবো অপরাধী যাতে কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি পায় । রণি লক্ষ্য করে এক অন্য তমসাকে , কি তেজ আর দীপ্তি । তমসারা এইভাবেই বাঁচুক আজীবন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *