জীবনের খানা-খন্দে হোঁচট খেতে খেতে..
পেরিয়ে যাওয়া আরো একটা মাইল ফলক,
ধুলো ঝেরে উঠে দাঁড়িয়ে, রাস্তার ধূসরতা ধুয়ে ধুয়ে..
জীবন জেনেছে কি, চিনছে দু-এক ঝলক?
তার হাসিতে নক্ষত্র খসে এখনো
সে কথা বললে গান থামায় প্রভাতি পাখি,
নির্জন দুপুরে কবিতা পাঠ করলে,
ফেরিওয়ালা ফেরি নামিয়ে জিরিয়ে নেয় একটু-খানি।
বৃষ্টি ভেজায় কখনো- কখনো বা ভেজায় মেঘলা ছাতা,
কখনো ঝড়-ঝাপ্টা ফিরিয়ে দেয় বুকচিতানো বদ্ধ-জানালায়।
আর কাঁচ দিয়ে যত্নে সাজায় ঘরের ভিতর
কষ্টগুলো গুছিয়ে তুলে রাখে ফুলদানি, আলনায়।
এমনকি বদমেজাজি কালবৈশাখীতেও
জীবন রেখে রক্তিম সাগ্নিক,
আর কত দূর ছুটে গেলে খুঁজে পাওয়া যায় নিজেকে?
ভেবে-ভেবেই চরকা কাটে জীবনের, গোলকধাঁধায় আহ্নিক।
বারণ সত্বেও, চোখ তুলে আকাশ দেখে
রাত্রী জাগে, তারায় তারায় হাঁটে বেড়ায়,
বেদনা উড়িয়ে পারাবত চুমু দেয় বাতাসে
কীভাবে নিজের থেকে সরে অন্যের পাশে দাঁড়ানো যায়?
কফির কাপে নেশা করে জীবনকে
ধুলো জমে অগোছালো দিনলিপি।
গোছাতে হবে নিজেকে, ভেবে-ভেবে
ধুলো মুছে চকচকে স্মৃতি-ঢিবি।
ভাবে, এই একটু খানি উঠলাম বেড়ে,
মনে হয় এই একটু খানি হলাম বড়!
তবে কী জানো? এসবই আসলে
একটা নতুন ক্ষয়ের সূচনা হলো!
জাহাজ দিগন্তে লীন। ছুঁয়েছে শীত
শক্ত বরফ, জমাট বাঁধা হৃদয়-বন্দর!
বসন্তে আসা কচি সবুজ পাতাকেও
একদিন ঝরে যেতে হবে বলেই বসন্ত সুন্দর!
পিছুটানের মাস্তুল, তবু দীর্ঘশ্বাসের হাওয়ায় এগিয়ে চলে পাল,
কখনো থেমে মেপেছে কতটা বাড়লো জোয়ারের নীল?
আচ্ছা, আকাশে চোখ রাখতে এখনো হয় ঘাড়ে ব্যাথা?
তবে এ শুধু এখনো নিজেকে জন্ম না দেওয়া জন্মদিন।
তবু ‘ছুটছে-ছুটবে জীবন’, থেমে যাবে শুধু সেদিন
করতালি দেবে মুখ লুকনো সব মাইন,
তবু থাকবে নাকো শরীরে ক্লান্তির কোনো লেস,
যেদিন বুকের কাছে ছুঁয়ার দূরত্বে ফিনিশিং লাইন।
পাথরে ফুটুক জুঁই ফুল,
ঘৃণার পিঠে ভালোবাসার চাবুকে,
যুদ্ধ ঘুমাক স্থগিত এ রাতে,
বাইরে ক্যাম্পফায়ার, ভিতরে উষ্ণ-তাবুতে!
আয়েশ করে আয়েশা, জীবন জিরিয়ে নেক একটু,
কুষান কিংবা উপহারে পাওয়া শিরনি, বালিসে;
আরো..আরো..আরো একটু হাস তুই প্লিজ,
তুই হাসলে কবিতা আসে কবিদের প্যাপিরাসে।