আতঙ্কে
বিকেল পাঁচটায় অফিস থেকে বেরোয় সুমিত। আকাশে বাদল মেঘের ঘনঘটা।ঝেঁপে বৃষ্টি নামল বলে।অথচ সকালে ঝকঝকে রোদ্দূরে এমন কোনো অবস্থার কথা ভাবতেই পারে নি সে। সঙ্গে ছাতাও নেই। বাসস্ট্যাণ্ডে অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর বাদুড়ঝোলা একটি বাসে কোনক্রমে সেঁধিয়ে গেল।বৃষ্টি তখনো নামে নি।তবে প্রবল ঝড়ো হাওয়া বইছে। আবার অর্দ্ধেক রাস্তা যাওয়ার পর বৃষ্টির প্রবল তেজে সে চিন্তিত হয়।আজ ভিজতেই হবে।তবে রোজকার মতন সল্টলেকে করুণাময়ের আগের ষ্টপেজে নামে।ছুট্টে গিয়ে সামনের দোতলা বাড়ীর গাড়ী-বারান্দার নীচে আশ্রয় নিল।ভিজেছে খানিকটা। সেখানে কিচুক্ষণ অপেক্ষার পর ঐ বাড়ীর বৃদ্ধকর্তা বেরোলে সুমিতকে দেখতে পান। বলেন, ওহে ঐখানে দাঁড়িয়ে কেন? ভেতরে এসে বসো। আমতা-আমতা করে সুমিত বলে, যাব আমি!
-হ্যাঁ, তোমাকেই ডাকছি। ভরসা পেয়ে সুমিত বৃদ্ধকে অনুসরণ করে বাড়ীর অন্দরে যায়। বৃদ্ধ শুধোন, কখন অফিস থেকে বেরিয়েছো?
-বিকেল পাঁচটায়।
-এখন সোয়া ছটা।একটু চা হলে মন্দ হয় না। কি বলো? সম্মতিসূচক মাথা নাড়ে সুমিত।এরপর বৃষ্টিভেজা দিনে এককাপ চা আর বিস্কুট এলে সে সানন্দেই তা উপভোগ করে। চা খেতে খেতে বৃদ্ধ শুধোন, তোমার নাম কি?
-সুমিত সান্যাল।
আরো দু চার কথা বলার পর প্রশ্ন করেন, কোথায় কাজ করা হয়?
-মেডিকেল কলেজের কোভিড সেণ্টারে।
ভয়ংকর চমকে ওঠেন বৃদ্ধ। চেঁচিয়ে আদেশ করেন, বেরো বেরো এখান থেকে। আমাদের বাড়ীতে ভাইরাস ছড়িয়ে গেল কিনা, কে জানে? পড়িমড়ি করে একদৌড়ে সুমিত ঐ ঘর ছেড়ে বেরিয়ে বাড়ীর চৌহদ্দি পার করে রাজপথে নেমে পড়ে।বৃষ্টির দাপট তখন অনেকটাই ম্রিয়মাণ।